Visit our YouTube channel Visit Now Watch Now!

কল্পনার দৌড় কতদূর? ৩য় অংশ


 কসমোলজিক্যাল ফিজিক্সে সবচেয়ে বড় প্রশ্নগুলো হচ্ছে যদি বিগ ব্যাং ঘটেই থাকে তাহলে এর পেছনের তাড়না কি ছিল? কোন কারনে এটি বিস্ফোরিত হয়েছিল? মহাবিশ্ব কেন ত্বরিত হারে প্রসারিত হচ্ছে? আর ঈশ্বর বিগ ব্যাং এর আগেই বা কি করছিলেন? 

খ্রিস্টান ধর্মযাজক সেন্ট অগাস্টিন কে মাঝে মাঝে লোকজন প্রশ্ন করত যে মহাবিশ্ব সৃষ্টির আগে ঈশ্বর কি করছিলেন? 

তখন সেন্ট অগাস্টিন বলতেন ,"ঈশ্বর তখন নরক সৃষ্টি করছিলেন সেই সমস্ত লোকের জন্য যারা এ ধরনের প্রশ্ন করে।"

এছাড়াও এখানে আরো খুঁতখুঁতে প্রশ্ন রয়েছে।

আমাদের মহাবিশ্বের মাত্র ৪% ভর হচ্ছে দৃশ্যমান বাকি সবকিছুই হচ্ছে অদৃশ্য। 

পদার্থবিজ্ঞানীরা এ সকল অদৃশ্য পদার্থের নাম দিয়েছেন গুপ্ত পদার্থ বা ডার্ক ম্যাটার এবং অদৃশ্য শক্তির নাম দিয়েছেন গুপ্ত শক্তি বা ডার্ক এনার্জি। 


এসব কিছু এখনো আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমরা এখনো জানিনা আমাদের মহাবিশ্ব কত বড়। যদি বিগ ব্যাং ঘটে থাকে তাহলে আমাদের দৃশ্যমান পদার্থ সৃষ্টির সাথে সাথে সেখানে সমপরিমাণ অ্যান্টিম্যাটারও সৃষ্টি হবে। 

কিন্তু এগুলো কালের গর্ভে কোথায় বিলীন হয়ে গেল তা আমরা এখনো জানিনা। সর্বশেষ আমরা প্রতি হাইড্রোজেনের মেঘ শনাক্ত করতে পেরেছি। কিন্তু মহাবিশ্বে আজ পর্যন্ত কোথাও প্রতি হিলিয়ামের অস্তিত্ব দেখা যায়নি। আর পর্যায় সারণির বাকি মৌলগুলো তো দূরের কথা। 


বিজ্ঞানীরা যখন নক্ষত্র এবং গ্রহগুলোকে কোয়ান্টাইজড করলেন তখন তা বিস্ময়কর সম্ভাবনার প্লাবণ খুলে দিল। এর ফলে সমীকরণগুলোর ফিনকি দিয়ে বেরিয়ে এলো অদ্ভুত সব পরিঘটনা - টাইম ট্রাভেল, ব্ল্যাকহোল, ওয়ার্ম হোল, ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি আরো ইত্যাদি ইত্যাদি। 

আমরা এখনো জানি না ব্ল্যাক হোলে পড়ে গেলে কি হবে কিংবা ব্ল্যাকহোলের ওপারে কি আছে? সাধারণ আপেক্ষিকতা প্রয়োগ করলে দেখা যায় ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্রে মহাকর্ষ বল অসীম কিন্তু আসলে তা কোন মানে দেয় না। 

ব্ল্যাকহোল এমনভাবে স্থান কালকে দুমড়ে মুচড়ে বিকৃত করে যে আপনি অতীতে ঢুকে যেতে পারবেন। (সম্প্রতি ২০১৮ সালে যখন বিজ্ঞানীরা ব্ল্যাকহোলের প্রথম ছবি তুললেন তখন মানুষ প্রথমবার দানবের মতো উত্তপ্ত অগ্নিগর্ভের দিকে তাকিয়েছিল। আর তা কল্পনাকে গ্রাস করেছিল)


ব্লাকহোল 


 যেদিন মহাকর্ষে কোয়ান্টাম তত্ত্ব প্রয়োগ আমরা করতে পারব সেদিন এই প্রশ্নের জবাব দেওয়া যাবে। অনেক বিজ্ঞানী ধারণা করেন ব্ল্যাকহোলে কোন বস্তু পড়ে গেলে তা কেন্দ্রে গিয়ে বিস্ফোরিত হয় এবং সেখানে একটি হোয়াইট হোল এর সৃষ্টি হয় যা সবকিছু উগলে দেয়। হতে পারে আমাদের এই পৃথিবী হোয়াইট হোল থেকে উগলানো অন্য কোন মহাবিশ্ব থেকে আসা বস্তু।

আমরা এখনো জানিনা মহাবিশ্বে কোথাও কোন প্রাকৃতিক ওয়ার্মহোলের অস্তিত্ব আছে কিনা? আর গবেষণাগারে কেউ বসে ওয়ার্মহোল বানিয়ে ফেলবেন তা দুরাশা। তা করতে প্রচণ্ড শক্তি লাগবে যার জোগান দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। ওয়ার্মহোল ব্যবহার করে আপনি স্থান কালের ভেতর দিয়ে শর্টকাট ব্যবহার করে অন্য কোথাও চলে যেতে পারবেন।


 এটি অ্যালিসের আয়নার মতো , যার একপাশে রয়েছে অক্সফোর্ডের একটি সুন্দর গ্রাম আর একপাশে রয়েছে অন্য কোনো শহর। ঠিক যেন ডোরেমনের সেই অলৌকিক দরজা। হতে পারে কোন একদিন তা আমাদের স্যাটেলাইটে ধরা পড়বে। 

তার সাথে জন্ম হলো অনেক দুর্ভেদ্য প্যারাডক্সের। সুতরাং আপনি যদি টাইম মেশিনে করে অতীতে যেতে চান তাহলে তা করার আগে আপনাকে এই সমস্ত প্যারাডক্সের উত্তর দিয়ে যেতে হবে। এমন কিছু অতি পরিচিত প্যারাডক্স রয়েছে যা বর্তমানকে অসম্ভব করে তুলবে।

যেদিন আমরা পদার্থবিজ্ঞানের জন্য একটি তত্ত্ব আবিষ্কার করতে পারব যা কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও সাধারণ আপেক্ষিকতাকে একত্র করবে ঠিক সেদিন এ সকল বহল আলোচিত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব।  

আর এটিই হবে পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় সফলতা এবং এটিই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা মহাবিশ্ব সম্পর্কে ০.০০০০১% ও এখনো জানিনা। 

আর কোনোদিন আমরা জানতে পারব কিনা তারও নিশ্চয়তা নেই।  





শাহরিয়ার আহমেদ
সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, সৈয়দপুর নীলফামারী, বাংলাদেশ 




About the Author

Mystery Knowledge and Reality...!!!

২টি মন্তব্য

  1. Great 😃👍👍
    1. Literally just optimistic 👍👍🤠
Information is wealth... MKR Web
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.